প্রাচীন কাল থেকেই পোস্ট অফিসের মাধ্যমে বিদেশে পণ্য আমদানি রপ্তানি করা হয়। বিশেষ করে বিদেশ থেকে আগের যুগে প্রচুর পরিমাণে চিঠি আদান-প্রদান করা হতো এই পোস্ট অফিসের মাধ্যমে। বাংলাদেশ সব পোস্ট অফিসের মাধ্যমে অনেক আগে থেকেই পণ্য আমদানি রপ্তানি করা হয়ে থাকে। যেহেতু এটি মানুষের ভিতরে খুবই একটি পপুলার মাধ্যম সেহেতু মানুষের ভিতরে এই পোস্ট অফিসে পণ্য আদান-প্রদানের ব্যাপারে একটি ভালো পজিটিভ ধারণা রয়েছে ৷ সুতরাং মানুষ চায় যে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে বিদেশে পণ্য আমদানি রপ্তানি করতে।
কিন্তু কিভাবে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে বিদেশ পার্সেল পাঠাতে কত টাকা খরচ হয় এটি অনেকেই সঠিক ভাবে জানেন না।
আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাদেরকে দেখানোর চেষ্টা করব যে বিদেশ পার্সেল পাঠাতে কত টাকা খরচ হয় ।
পোস্ট অফিসে পার্সেল পাঠাতে কত টাকা লাগবে ?
পোস্ট অফিসের মাধ্যমে বিদেশে পার্সেল পাঠানোর নিয়ম
প্রাচীন কাল থেকেই পোস্ট অফিসের মাধ্যমে বিদেশে পণ্য আমদানি রপ্তানি করা হয়। বিশেষ করে বিদেশ থেকে আগের যুগে প্রচুর পরিমাণে চিঠি আদান-প্রদান করা হতো এই পোস্ট অফিসের মাধ্যমে। বাংলাদেশ সব পোস্ট অফিসের মাধ্যমে অনেক আগে থেকেই পণ্য আমদানি রপ্তানি করা হয়ে থাকে। যেহেতু এটি মানুষের ভিতরে খুবই একটি পপুলার মাধ্যম সেহেতু মানুষের ভিতরে এই পোস্ট অফিসে পণ্য আদান-প্রদানের ব্যাপারে একটি ভালো পজিটিভ ধারণা রয়েছে ৷ সুতরাং মানুষ চায় যে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে বিদেশে পণ্য আমদানি রপ্তানি করতে।
কিন্তু কিভাবে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করা যায় বা বিদেশি পণ্য রপ্তানি করা যায় এটি অনেকেই সঠিক ভাবে জানেন না।
আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাদেরকে দেখানোর চেষ্টা করব যে কিভাবে আপনারা বিদেশে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পণ্য পাঠাবেন এবং বিদেশ থেকে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পণ্য আমদানি করবেন।
পোস্ট অফিসের মাধ্যমে বিদেশে পার্সেল পাঠানোর নিয়ম
পোস্ট অফিস দিয়ে আমরা চিঠিপত্র আদান-প্রদান করলেও পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পার্সেল বিদেশে পাঠানোর সিস্টেম টা একটু ভিন্ন। এটা কিন্তু সব পোস্ট অফিস থেকে করা যায় না। যদিও আমরা পোস্ট অফিসের মাধ্যমে যে কোন দেশ থেকে পণ্য পাঠালে সেটি যে কোন পোস্ট অফিস দিয়ে গ্রহণ করতে পারি কিন্তু সকল পোস্ট অফিস দিয়ে পণ্য আপনি বিদেশে পাঠাতে পারবেন না।
নির্দিষ্ট কিছু পোস্ট অফিস রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি পণ্য বিদেশে রপ্তানি করতে পারবেন। যেমন জেলা পোস্ট অফিস গুলো থেকে অথবা বিভাগীয় পোস্ট অফিস থেকে অথবা পোস্ট অফিসের সদর দপ্তর ঢাকা জিপিও থেকে আপনি খুব সহজেই পার্সেল বিদেশে পাঠাতে পারবেন।
পোস্ট অফিসে পার্সেল বিদেশে পাঠাতে কি কি কাগজপত্র লাগবে ?
পোস্ট অফিসের মাধ্যমে যদি আপনি পার্সেল বিদেশে পাঠাতে চান সে ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো কাগজপত্র লাগবেনা। আপনি যে সমস্ত প্রোডাক্টগুলো বিদেশে পাঠাবেন সেগুলোর একটি ইনভয়েস তৈরি করে পোস্ট অফিসে অগ্রিম নিয়ে যেতে হবে। সেই ইনভয়েসের মধ্যে আপনি কাকে এই প্রোডাক্টটা পাঠাচ্ছেন এবং আপনার নিজের ঠিকানা সেখানে লিখে দিবেন এবং কি কি পণ্য সেই প্যাকের মধ্যে রয়েছে সেটা আপনি ইনভয়েসে উল্লেখ করে দিবেন।
এরপরে সেই প্যাকেজটা আপনি ভালো করে বাঁধাই করে নিয়ে যাবেন পোস্ট অফিসে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের একটি কপি তারা চাইতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি পোস্ট অফিসে জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি দিতে পারেন।
পোস্ট অফিসের মাধ্যমে বিদেশে কত কেজি সর্বোচ্চ পার্সেল পাঠানো সম্ভব ?
সাধারণত পোস্ট অফিস ইএমএস সার্ভিস ব্যবহার করে বিদেশে পণ্য পাঠিয়ে থাকে। ইএমএস সার্ভিস এর মাধ্যমে সর্বোচ্চ ২০ কেজি প্রোডাক্ট বিদেশে পাঠানো যায়। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের নিয়ম-কানুন রয়েছে বিধায় বাংলাদেশ থেকে আপনি ১ থেকে ২০ কেজি প্রোডাক্ট পোস্ট অফিসের মাধ্যমে বিদেশে পাঠাতে পারবেন।
পোস্ট অফিসের মাধ্যমে কি কি ধরনের পণ্য পার্সেল হিসেবে পাঠানো যায় ?
আপনি পোস্ট অফিস এর মাধ্যমে বৈধ যে কোন ধরনের পণ্য বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাঠানো পাঠাতে পারবেন। তবে লিকুইড জাতীয় পদার্থ বা দাহ্য পদার্থ অথবা যেগুলা পচে যায় গলে যায় এই ধরনের প্রোডাক্ট আপনারা পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পাঠাতে পারবেন না। এছাড়া তামাক জাতীয় পদার্থ মাদকদ্রব্য এগুলো পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পাঠানো যাবে না।
পোস্ট অফিসে পার্সেল পাঠালে বিদেশে পার্সেল পাঠালে কতদিন সময় লাগে ?
আপনি যদি পোস্ট অফিসের সার্ভিস কখনো ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আপনি জানবেন যে। পোস্ট অফিসের মাধ্যমে যেকোনো পার্সেল বিদেশে পাঠালে সেটি যেতে দেশ অনুযায়ী ৩০ থেকে ৪০ দিন সময় লেগে যেতে পারে। তবে মিনিমাম ২৫ দিন সময় লাগে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে একটি পার্সেল যে কোন দেশে যেতে। সুতরাং বুঝতে পারতেছেন যদি আপনারা এই ৩০ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে এমন কোন প্রোডাক্ট দেন যেই প্রোডাক্টটা পচে যাবে বা গলে যাবে সেটা পার্সেল করা যাবে না।
পোস্ট অফিসে পার্সেল পাঠাতে কত টাকা লাগবে ?
আমদানি পণ্য শুল্কায়নে নতুন নিয়ম চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। অভিন্ন মূল্যে পণ্যের শুল্কায়ন করতে দেশের সব কাস্টম হাউজ ও শুল্ক স্টেশন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে এনবিআর। সম্প্রতি এসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এত দিন প্রতিটি কাস্টম হাউজ পৃথকভাবে পণ্যমূল্যের ভিত্তিতে শুল্কায়ন করত। নতুন নিয়মে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে আমদানি করা পণ্য যে মূল্যে শুল্কায়ন করা হবে, একই মূল্যে সব কাস্টম হাউজ ও শুল্ক স্টেশনে শুল্কায়ন করতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘রাজস্ব আহরণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার স্বার্থে এক ও অভিন্ন মূল্যে পণ্যের শুল্কায়ন এবং শুল্কায়নযোগ্য পণ্যের সঠিক মূল্য নির্ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ অবস্থায় এনবিআরের অধিভুক্ত সব কাস্টম হাউজ ও কাস্টম স্টেশনে আমদানি ও রপ্তানি পণ্য চালানের যথাযথ পরিমাণ নিশ্চিতকরণ এবং এক ও অভিন্ন মূল্যে শুল্কায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। এনবিআর বছরে যে পরিমাণ রাজস্ব সংগ্রহ করে, তার প্রায় ৩০ শতাংশই আসে আমদানি শুল্ক থেকে।
প্রসঙ্গত, এখন এনবিআরের অধীনে পূর্ণাঙ্গ কাস্টম হাউজ আছে ১২টি আর সক্রিয় শুল্ক স্টেশন রয়েছে ৩৬টি।
রাজস্ব সংশ্লিষ্ট যারা আছেন তারা মনে করেন যে এই নিয়ম যদি বাংলাদেশে চালু
হয় তাহলে আমদানি-রপ্তানির ব্যবসায় ক্ষেত্রে আমদানিকারক আরো স্বচ্ছতার
সহিত আমদানী করতে পারবেন। কারণ বিভিন্ন পোর্টে বিভিন্ন ধরনের
অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু থাকার কারণে অনেকেই সেই সমস্ত পোর্ট দিয়ে আমদানি করতে চাচ্ছে
না । যেমন বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট কাস্টমসে সকল পণ্যের খুব বেশি এসেমেন্ট ভ্যালু ধরা হয়। যে
কারণে সেখানে আমদানি করতে চাইলেও আমদানি করেন না। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য
অনেকটা ব্যাহত হয়ে থাকে । ফলে এ নতুন এই নিয়ম চালু করা হলে মানুষের আমদানি
করার ক্ষেত্রে অনেকটা আগ্রহ বাড়বে এবং খুব জরুরি ভিত্তিতে মানুষে
বিভিন্ন পোর্টে আমদানি করবে।
নবিআরে নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০০০ সালের শুল্ক মূল্যায়ন বিধিমালা অনুযায়ী রাজস্ব আহরণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার স্বার্থে এক ও অভিন্ন মূল্যে কোনো পণ্যের শুল্কায়ন এবং শুল্কায়নযোগ্য পণ্যের সঠিক মূল্যায়ন নির্ধারণ করা অত্যন্ত জরুরি।
বর্তমানে প্রতিটি কাস্টম হাউস পৃথকভাবে পণ্যমূল্যের ভিত্তিতে শুল্কায়ন করে থাকে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে আমদানি করা কোনো পণ্যের চালান যে মূল্যে শুল্কায়ন করা হবে, ঠিক একই মূল্যে দেশের অন্যসব কাস্টমস হাউস এবং শুল্ক স্টেশনেও তা করতে হবে।
তবে এনবিআরের নতুন নির্দেশনায় সমস্যাও আছে। যেমন চীন ও ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যের দামের ও গুণগত মানের পার্থক্য থাকত পারে। আবার জাপান থেকে যে পণ্য ২০০ ডলারে আমদানি করা হয়, সেটি ভারত থেকে আনলে ১০০ ডলার লাগতে পারে। তাহলে শুল্কায়নযোগ্য মূল্য কোনটি ধরা হবে, এ রকম প্রশ্নই উঠেছে ব্যবসায়ী মহল থেকে।
বাংলাদেশ সি অ্যান্ড এফের লোকজন মনে করেন, এই বিষয়টা হলে কাস্টমস এর ক্ষেত্রে যে সমস্ত
ভুল বুঝাবুঝি তৈরি হয়েছে সেটা দূর হবে। কারণ আমদানিকারকরা অনেকেই মনে করে যে সি অ্যান্ড এফরা এই সমস্যা তৈরি করেন।
এক্ষেত্রে তাদের ভিতর থেকে এই ভুলধারনা দূর হবে এবং সবাই খুব সহজে পণ্য আমদানি করতে পারবেন।
এনবিআরের শুল্ক বিভাগের এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, অনেক আমদানিকারক কম মূল্য দেখিয়ে শুল্ক-কর ফাঁকি দেন। এই প্রবণতা রোধ করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তথ্য সুত্রঃ ittefaq
বাংলাদেশ রপ্তানি প্রধান দেশ হলেও আমদানি করা হয় প্রচুর পরিমাণে। ইন্ডিয়া বাংলাদেশের পাশের দেশ হওয়াতে ইন্ডিয়া থেকেও প্রচুর পরিমাণে পণ্য বাংলাদেশে আমদানি করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের যেসব খাদ্য দ্রব্য আমদানি হয়ে থাকে তার প্রয় অধিকাংশ পণ্য আমদানি করা হয় ইন্ডিয়া থেকে। কৃষি প্রধান দেশ হিসেবে ইন্ডিয়ায়তে প্রচুর খাদ্য শস্য উৎপাদন হয়ে থাকে। এ ছাড়া ইন্ডিয়া পোশাক শিল্পের জন্য বিখ্যাত । পোশাক এর মধ্যে আছে শাড়ি, থ্রিপিস, কাপড় উল্লেখযোগ্য হারে ইন্ডিয়া থেকে আমদানি করা । ফলে অনেকেই ইন্ডিয়ান পণ্য আমদানি করে ব্যবসা করতে চান। তাই আমাদের মধ্য অনেকেই জানতে চেয়েছেন কিভাবে ইন্ডিয়া থেকে পন্য আমদানি করে ব্যবসা করব। আজকের পোষ্টে বিস্তারিত লেখবো কিভাবে ইন্ডিয়া থেকে পণ্য আমদানি করবেন।
বাংলাদেশ ইন্ডিয়ার একবারে কাছের দেশ হওয়াতে বৈধ অবৈধ সকল পথেই পণ্য বাংলাদেশে আসে। তবে আমরা আলোচনা করবো কিভাবে বৈধ পথে পণ্য আমদানি করা যাবে।
ইন্ডিয়া থেকে যদি আপনি ছোট পরিমাণে পণ্য আমদানি করতে চান। সেটার জন্য আপনি বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসের সহযোগিতা নিতে পারেন। এছাড়াও ইন্ডিয়া থেকে আপনি পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পণ্য আমদানি করতে পারেন। তবে কুরিয়ারের মাধ্যমে পণ্য আমদানি করলে সেক্ষেত্রে আপনাকে অনেক টাকা ট্যাক্স এবং ভাড়া পরিষদ করতে হবে। কারণ আমরা নরমাল যেই পণ্য আমদানি করে থাকি সেটার চেয়ে বেশি পরিমাণে ট্যাক্স আসে কুরিয়ারে আমদানি করলে। প্রতি কেজিতে আপনাদেরকে প্রায় দুই হাজার টাকার মতো ভাড়া পরিশোধ করতে হবে। কুরিয়ারে পণ্য আমদানি করলে আপনার কোন আমদানি লাইসেন্সের প্রয়োজন হবে না।
এবার আলোচনা করবো ইন্ডিয়া থেকে বেশি পরিমান পন্য আমদানি করবেন। আমদানির প্রথমে আমাদের একটা বিসয় মনে রাখতে হবে যে, বৈধ ভাবে বিশ্বের যে কোন রাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানি করতে আপনাকে আমদানি লাইসেন্স করতে হবে। কারন ইন্ডিয়া থেকে আমরা সাধারনত বাই রোডে পণ্য আমদানি করে থাকবো।বাংলাদেশের যে কোন স্তলবন্দরে আপনি পণ্য আমদনি করলে অবশ্যই আপনাকে আমদানি লাইসেন্স করে পণ্য আমদানি করতে হবে।
আমদানি করার জন্য প্রথম কাজ হলো সাম্পাল আমদানি করা । এই স্যাম্পল অধিকাংশ সময় ফ্রি দিয়ে থাকে।এসব স্যাম্পল DHL,FEDEX,TNT দিয়ে বাংলাদেশে আমদানি করতে হয়। আপনার যদি DHL,FEDEX,TNT তে আকাউন্ট না থাকে তবে স্যাম্পল এর জন্য আপানকে আগেই সেলারকে কুরিয়ার চার্জ পরিশোধ করতে হবে। এবার আপনাকে কুরিয়ার থেকে ফোন করে জানানো হবে আপনার পণ্য চলে আসেছে । দুই ভাবে আপনি পণ্যটি পেতে পারেন। কুরিয়ার কোম্পানি আপনার কাছে পৌঁছে দিবে অথবা আপনাকে পণ্যের সকল কাগজ পত্র দিয়ে যাবে, আপনি ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে সি এন্ড এফ দিয়ে পণ্য ছাড়িয়ে নিতে পারবেন।
স্যাম্পল পছন্দ হলে আপনি সাপ্লায়ারকে বলবেন পি আই দিতে। পি আই আসলে কি এটা নিয়ে আমাদের বিস্তারিত ভিডিও এবং আর্টিকেল আছে। দেখে নিবেন। আপনার কাজ এতটুকুই শেষ। এবারের কাজ হলো ইন্ডিয়ান যে সেলার আছে তার Importer Exporter Code (IEC)আছে কিনা তা নিশ্চিত করা। কারণ Importer Exporter Code (IEC) ছাড়া ইন্ডিয়া থেকে পণ্য রপ্তানি করা যায়না।
কিভাবে ইন্ডিয়া তে Importer Exporter Code (IEC) করতে হয়?
সাপ্লায়ার যদি না যানে তাহলে আপনি তাকে বলে দিবেন। আমদানি বা রপ্তানি কারক রা প্রথমে dgft ওয়েবসাইটে গিয়ে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে e-IEC এর জন্য একটা ANF2A অনলাইন ফর্ম পুরন করতে হবে। সাথে ডিজিটাল সাইন ও দিয়ে দিতে হবে। তবে এটা DIPP এর e-biz portal থেকেও করা যাবে। আপনি প্রথমে এই বিষয়টি জেনে নিবেন।
এলসি করা
পি আই নিয়ে এবার আপনি বাঙ্কে জাবেন। ব্যাংক আপনাকে পরবর্তী কাজের নির্দেশনা দিবে। ব্যাংকে আপনি টাকা জমা দিবেন। যত ডলার এল সি করতে চান। তবে এলসিতে আপনি যে পণ্য আমদানি করবেন মূল ক্রয় দাম উল্লেখ করতে হয়।খুব সাবধানে এলসি ফর্ম পুরন করতে হবে। এখানে আপনি যে পণ্য আনবেন তার নাম এবং HS কোড এবং ফুল ভ্যলু উল্লেখ করতে হবে। কোন ভাবেই যেন HS কোড ভুল না হয়।এবার ব্যাংক সকল কাগজ পত্র সেলারকে পাঠাবে। সেলার সব যাচাই বাছাই করে, ট্রাক চালান, এল সি ফর্ম, পি আই, কমার্শিয়াল ইনভএস, প্যাকিং লিস্ট পুনরায় বাঙ্কে পাঠাবে। ব্যাংক সকল কাগজ পত্র সাইন করে আপনাকে দিয়ে দিবে।
পণ্য ছাড় করানো
এবার আপনার কাজ হলে পন্য ছাড় করানো। সাপ্লায়ার আপনাকে আমদানি করা পন্যের সকল ডকুমেন্টস কুরিয়ার সার্ভিস এর মাধ্যমে পাঠিয়ে দিবে। পন্য পাওয়ার পর সকল ডকুমেন্টস একজন সি এন্ড এপ কে দিবেন। তিনি আপনার পন্য ছাড়ানোর ব্যবস্থা করবে। পন্য ছাড়ানোর পর সি এন্ড এপ থেকে সকল ডকুমেন্টস বুঝে নিবেন। এগুলো গুরুত্বপূর্ণ। সি এন্ড এপ কে কাজ দেওয়া আগে ভালো ভাবে কথা বলে নিবেন।
ইন্ডিয়া থেকে পন্য আমদানির অন্যন্য নিয়ম
এটা হলো আপনি পন্য কিনে বাংলাদেশ এর যে কোন শিপিং এজেন্ট এর ইন্ডিয়ার ওয়ার হাউস এ গিয়ে পন্য দিয়ে আসবেন তারা পন্য ইন্ডিয়া থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসবে। এ ক্ষেত্রে তারা কেজি হিসেবে শিপিং করে এনে দিবে। এটাকে বলে ডোর টু ডোরে পন্য আমদানি। এভাবে আপনি নিজে গিয়ে তাদের কাছে পন্য দিয়ে আসতে পারেন বা যে সাপ্লায়ার থেকে পন্য আপনি অনলাইনে কিনবেন তাদের বলবেন তাদের বাংলাদেশের শিপিং এজেন্ট এর ঠিকানায় পাঠাতে। তবে যে পন্য গুলো খুব দামী সেগুলো এ সিস্টেমে আপনি আমদানি করবেন না।
লাগেজ এর মাধ্যমে পন্য আমদানি, যেমন আপনি ইন্ডিয়া থেকে কিছু পরিমাণ পন্য আমদানি করতে পারেন। ফ্রি টেক্স দিয়ে।
টেক্স দিয়ে লাগেজ করে পন্য আমদানি করতে পারেন তবে সেটি বাংলাদেশ লাগেজ আইন অনুযায়ী হবে। বাংলাদেশ লাগেজ আইন পড়তে এখানে ক্লিক করুন। আপনি যদি লাগেজ করে বেশি পন্য আমদানি করেন তাহলে লাগেজ আইন অনুযায়ী তা বাজেয়াপ্ত করবে।
এ ছাড়া অবৈধ অনেক উপায়ে পন্য আমদানি করতে পারেন। সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত অলোচনা করা হলো না। অবৈধ পথে পন্য আমদানি করতে কিছু কম খরচ হবে। কিন্তু এক বার যদি পন্য না আসে তাহলে আপনার এত দিনের সকল ব্যবসা শেষ। তাই আমাদের উপদেশ হলো বৈধ ভাবে পন্য আমদানি করা। যদি আপনি সকল বিষয়ে না জানেন তাহলে আপনি আমাদের এই ওয়েব সাইটে দেখতে পারেন।
ইন্ডিয়া থেকে আমদানি করতে কিছু বিষয় খেয়াল রাখবেন
পণ্যের দাম কোন মুদ্রায় ঘোষণা করবেন ? ডলার নাকি রুপিতে ? ওরা সাধারণত রুপিতে সেল করে। আপনি যে কোন মুদ্রা এল সি তে উল্লেখ করতে পারবেন। সেটা সাপ্লায়ার এর সাথে কথা বলে নিবেন। ইন্ডিয়া থেকে সাধারণত ট্রাকে করে পন্য আমদানি করা হয় । এয়ারে সাধারণত খুব দামী পন্য আমদানি করা হয়। ট্রাকে পন্য আমদানিতে শিপিং খরচ কম হয় তাই কলকাতা বা আসে পাশের এলাকা গুলি থেকে আমদানি করার চেষ্টা করবেন। যেহেতু আমরা উভয়ে সার্ক ভুক্ত দেশ, তাই কিছু পণ্য আমদানিতে ট্যাক্স মউকুপের বিশেষ সুযোগ রয়েছে। আপনারা আমদানি করার আগে অবশ্যই সেগুলি ভালো করে যেনে নিবেন। খাদ্য দ্রব্র যেমনঃ চাল, ডাল , পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি আমদানি করতে সরকারের বিশেষ নিয়ম কানুন রয়েছে । কোন পোর্ট দিয়ে কোন পন্য আমদানি করবেন সেটা নির্ধারণ করবেন শিপিং চার্জ কোন পোর্ট এ কম আসে।
সি এন্ড এফ হলো এক ধরনের সরকারী এজেন্ট। যেকোনো পণ্য যখন আপনি কোন দেশ থেকে বৈধ ভাবে আমদানি করেন তবে আপনাকে সেই পণ্যের কাস্টমস ক্লিয়ারিং করতে হবে। কাস্টমসে আপনার সকল ডকুমেন্ট সাবমিট করলে কাস্টমস থেকে আপনার ট্যাক্স নির্ধারণ করা হবে। অনেকের প্রস্ন থাকে তাহলে c&f এর কাজ কি ? কারন সরকারী কর্মকর্তা যদি ট্যাক্স নির্ধারণ করে থাকেন তবে c&f এর কাজ কি ? সি এন্ড এফ এর কাজ আসলে আপনার হয়ে কাগজ পত্র কাস্টমসে সাবমিট করা।
ব্যাক্তি পর্যায়ে যে কেউ কোন পণ্য আমদানি করলে তার ট্যাক্স
সম্পর্কে পুরা পুরি ধারনা থাকা সম্ভব না। ঠিক এই কাজে c&f এর কাজ হলো
আপনাকে সঠিক পরামর্শ দেওয়া।
সি এন্ড এফ একটু ভিন্ন কাজে আপনাকে সহযোগীতা
করবে ৷ আসলে সি এন্ড এফ আপনাকে যে সহযোগীতা করবে তা আপনি নিজেও করতে
পারতেন ৷ কিন্তু আপনার পক্ষে এই জটিল বিষয়টি রপ্ত করতে আপনাকে প্রচুর সময়
ও জ্ঞান লাগবে ৷ সরকার সি এন্ড এফ কে নিয়োগ দিয়েছে এই জটিল কাজটিকে সহজ
করতে ৷ সি এন্ড এফ কে সরকার একটি লাইসেন্স দিয়ে থাকে ৷ তাদের কাজ হলো
সঠিক HS কোড নির্ধারন করে , যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাষ্টমসে আমদানী
পেপার সাবমিট করা ৷
উদাহরন স্বরুপ বলা যায় , আপনি যখন ঢাকা
এয়ারপোর্ট দিয়ে পন্য আমদানী করবেন তখন পন্য আসার পর আপনার প্রথম কাজই হলো
আপনার সমস্ত ডকুমেন্ট সি এন্ড এফ কে প্রদান করা ৷ সি এন্ড এফ তার
লাইসেন্সের ইউনিক কোডের মাধ্যমে সমস্ত পেপার অনলাইনে কাষ্টমসে সাবমিট করবে
৷ সরকার আপনার ডকুমেন্ট গুলি একটি C-Number দিয়ে চিহ্নিত করবে ৷ এবার
আপনার পেপারটি সি এন্ড এফ কাষ্টমসে নিয়ে যাবে ডিউটি এ্যসেসমেন্ট করতে ৷
এ্যসেসমেন্ট
শেষ হলে এবার ডিউটি পরিশোধ করে পন্য ডেলিভারীর ব্যবস্থা করবে ৷ এই কাজের
জন্য আপনি সি এন্ড এফ কে আপনি একটি ফি দিতে হবে ৷ সি এন্ড এফ ছাড়া আপনি
কোনভাবেই পন্য ছাড়াতে বা সরকারী ট্যাক্স দিতে পারবেননা ৷
আমদানি রপ্তানি ব্যবসা হবে আরো সহজ । ঢাকা এয়ারপোর্টে যে কোন পণ্য কাস্টমস ক্লিয়ারিং করতে সি অ্যান্ড এফের প্রয়োজন হলে কল করুন ।
+88 01531-173930 (WhatsApp, WeChat)
+88 01931-125727 (WhatsApp, WeChat)
সরকারী লাইসেন্স বিধিমালার অধীনে একজন c&f লাইসেন্সধারীর দায়িত্ব ও কর্তব ̈ হইবে নিম্নরূপ যথাঃ-
(ক)
প্রতিনিধি হিসাবে মনোনীত ব ̈ক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক লাইসেন্সিকে
প্রদত্ত ক্ষমতা অর্পণের পত্র সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করা ;
(খ)
গ্রাহক আইন অনুযায়ী কার্য সম্পাদন করেন নাই বা কোন দলিলে কোন মিথ্যা তথ্যা
উপস্থাপন করিয়াছেন, তদসম্পর্কে অবগত হইবার সঙ্গে সঙ্গে উহা লিখিতভাবে শুল্ক
কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা;
(গ) কাস্টমস সংশিষ্ট কার্য সম্পাদনে গ্রাহককে সঠিক তথ্য প্রদান করা;
(ঘ) জানিবার অধিকার রহিয়াছে এমন কোন কাস্টমস সংশিষ্ট তথ্য গ্রাহকের নিকট গোপন না করা;
(ঙ)
গ্রাহকের নিকট হইতে সরকারের কোন পাওনা প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে সরকারী
কোষাগারে জমা প্রদান করা এবং সরকারের নিকট হইতে গ্রাহকের পাওনা প্রাপ্তির
সঙ্গে সঙ্গে গ্রাহককে প্রদান করা;
(চ) শুল্ক কর্তৃপক্ষের কোন কাজে অযাচিত প্রভাব বিস্তার না করা;
(ছ)
সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব ̈তিরেকে কাস্টম হাউস বা কাস্টমস স্টেশনের
রেকর্ড বা শুল্ক কর্তৃপক্ষের অধিকারে থাকা কেন তথ ̈ সংগ্রহ না করা;
(জ) লাইসেন্স সংশিষ্ট কাজে এমন কোন ব্যাক্তিকে নিয়োগ না করা, যাহার লাইসেন্সের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হইয়াছে বা বাতিল করা হইয়াছে;
(ঝ)
কাস্টম হাউস বা কাস্টমস স্টেশনের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে কোন অর্থ
ধার বা কর্জ হিসাবে প্রদান না করা এবং এইরূপ কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী
কর্তৃক গৃহীত ধার বা কর্জ পরিশোধের জন ̈ জিম্মাদার না হওয়া;
(ঞ) ব ̈বসায়িক অফিসের ঠিকানা পরিবর্তন হইলে, উক্ত পরিবর্তন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষকে উহা অবগত করা;
(ট)
লাইসেন্স সংশিষ্ট আর্থিক লেনদেনের পূর্ণাঙ্গ দলিল এবং উহা দ্বারা সকল
কাস্টমস দলিল, চিঠি, বিল, হিসাব কমপক্ষে তিন বৎসর সময়ের জন ̈ নিজ ̄^ দপ্তরে
সংরক্ষণ ও মজুদ রাখা;
(ঠ) সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মনোনীত কো ন কাস্টমস কর্মকর্তা দফা
(ট) এ বর্ণিত কোন দলিল তলব করিলে উহা উপস্থাপন করা এবং উহার কোন অংশ গোপন, অপসারণ বা ধ্বংস না করা;
(ড) লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমোদন ব ̈তিরেকে লাইসেন্সিং কার্যক্রমের কোনরূপ গঠনগত পরিবর্তন না করা।
কোটিপতি হওয়ার ৫০টি টিপস ...।
১. শূন্য থেকে শুরু করে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠুন:-
বহু সফল ব্যক্তি খালি হাতেই তাদের কাজ শুরু করেছিলেন। স্টারবাকস প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও হাওয়ার্ড স্কুলজ ও গোল্ডম্যান সাক্স-এর সিইও লয়েড ব্ল্যাংকফেইন বড় হয়েছেন এভাবেই। প্রতিযোগিতা ও দুর্ভাগ্য তৈরি করে বড় নেতা।
২. যা ভালো লাগে, তাই করুন:-
অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস বলেন, ‘সবচেয়ে ভালো কাজের একমাত্র উপায় হল নিজের কাজকে ভালোবাসা। আপনি যদি এটা না পেয়ে থাকেন তাহলে খুঁজতে থাকুন। স্থীর হবেন না।’ তিনি ঠিকই বলেছিলেন। আপনি যদি নিজের আগ্রহের বিষয়ে কাজ করেন তাহলে গ্রাহকরাও আপনাকে খুঁজে বের করবে। আর এভাবে টাকাও খুঁজে বের করবে আপনাকে।
৩. সিলিকন ভ্যালি অনুসরণ করুন:-
যুক্তরাষ্ট্রের হাইটেক ইন্ডাস্ট্রির কেন্দ্র সিলিকন ভ্যালি বহু মানুষের ভাগ্য ফিরিয়েছে। শুধু প্রধান নির্বাহীরাই নয়, বহু চাকরিজীবীও এখানে খুব ভালো আছেন। এর কারণ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো হয়ে উঠেছে বহু মানুষের সমৃদ্ধির সোপান।
৪. নিজের ব্যবসা শুরু করুন, সন্নাসীর মতো থাকুন:-
নতুন ব্যবসা শুরু করে নিজে একজন সন্নাসীর মতো জীবন নির্বাহ করুন। আমেরিকার মিলিয়নেয়ারদের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশই আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে এ অবস্থায় এসেছেন। তাদের অধিকাংশই আবার ছোট ব্যবসা করেন আর তাদের সামর্থের চেয়ে কম অর্থে জীবন নির্বাহ করেন। তবে তাদের অর্থ তারা আবার ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন। সাধারণত তারা পূর্বপুরুষের কাছ থেকে কোনো অর্থ পাননি। তাই কেনার আগে আরেকবার চিন্তা করুন- আপনার কি নতুন গাড়ি বা দামি যন্ত্রটা লাগবেই?
৫. ঝুঁকি নিন, ভুল করুন, নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন:-
অধিকাংশ মানুষ অবিবেচনাপ্রসূত অথবা সাধ্যের অতিরিক্ত ঝুঁকি নিয়ে ফেলে, যা তাদের নেয়া উচিত নয়। তার বদলে স্মার্ট ঝুঁকি নিতে হবে, যা বাস্তবে পূরণ করা সম্ভব। নিজের ওপর বিশ্বাস রেখে সামনে এগিয়ে যান। ভুল হলেও তা স্বাভাবিক। আঘাত না পেয়ে কেউ সামনে এগোতে পারে না।
৬. অনেক ত্যাগ করে সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করুন:-
ইয়াহুর সিইও মেরিসা মেয়ার খুবই পরিশ্রমি একজন নারী। তিনি সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজ করেন। আর এলন মাস্ক দুটি প্রতিষ্ঠা চালান। একই বিষয় প্রযোজ্য ছিল স্টিভ জবসের ক্ষেত্রে। তিনি অ্যাপল ও পিক্সার চালাতেন। আপনি যা বিনিয়োগ করবেন তার ফলাফল পাবেন।
৭. নিজের ভাগ্য নিজেই তৈরি করুন:-
এটা বলা হয় যে, সুযোগ যখন প্রস্তুতির সঙ্গে মিলে যায় তখন সৌভাগ্য আসে। আমি খুব ভাগ্যবান – এ কথার পাশাপাশি এটাও সত্য যে আমি ভাগ্য খোঁজার কাজে কখনো থামিনি। আর যখনই কোনো সুযোগের আশা মিলেছে তা হারাইনি। এ কারণে অপ্রয়োজনীয় কাজ বাদ দিয়ে বাস্তব জগতের সফল মানুষদের সঙ্গে পরিচিত হতে হবে।
৮. স্থিতিশীল বিবাহিত জীবন:-
বিয়ে ভাঙার পর বহু ধনী মানুষের সম্পত্তি কমে গেছে। এ কারণে ধনী হওয়া ও থাকার জন্য স্থিতিশীল বিবাহিত জীবন গুরুত্বপূর্ণ।
৯. বৈচিত্র্য আনুন:-
বহু ধরনের ধারণা আনুন নিজের কাজে। এতে অনেক কষ্ট ও সময় ব্যয় হতে পারে। তবে প্রাথমিকভাবে কষ্ট হলেও ভবিষ্যতে এর সুফল অবশ্যই পাবেন।
১০. সর্বাত্মক চেষ্টা করুন:-
বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে আপনি সহজেই ধনী হতে পারবেন না। এ জন্য প্রথমেই যে কাজটি করতে হবে তা হলো টাকা উপার্জন বাড়ানোর জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা। আর এতে যে পথগুলো সফল হবে সে পথে উপার্জন বাড়ানোর জন্য ক্রমাগত চেষ্টা করতে হবে।
১১. লোক দেখানো বন্ধ করুন:-
সামান্য কিছু টাকা হলেই তা দিয়ে বিভিন্ন বিলাসদ্রব্য কেনা অভ্যাস বন্ধ করুন। পর্যাপ্ত টাকা না আসা পর্যন্ত দামি মোবাইল ফোন, ঘড়ি, গাড়ি ইত্যাদির পেছনে এক পয়সাও ব্যয় করা যাবে না। অর্থ ব্যয় করার বদলে তা জমিয়ে নতুন করে অর্থ উপার্জনের কাজে লাগান।
১২. বিনিয়োগ ক্ষেত্র বের করুন:-
আপনার টাকা জমানোর মূল উদ্দেশ্য হবে তা দিয়ে যুৎসই বিনিয়োগ করা। আপনার যে টাকাটাই জমবে তাই বিনিয়োগ করার পথ খুঁজুন।
১৩. লাভ ছাড়া ঋণ নয়:-
সরাসরি আর্থিক লাভ হয় না, এমন ঋণ বাদ দিন। ঋণ নিয়ে একটি গাড়ি কিনতে হলেও আপনার চিন্তা করতে হবে, এ থেকে কী লাভ হবে? যদি ব্যবসাক্ষেত্রে বড় অঙ্কের আর্থিক লাভ আনতে পারে গাড়িটি, তা হলেই কেবল তা কেনা যেতে পারে।
১৪. টাকাকে অগ্রাধিকার দিন:-
বহু মানুষই আর্থিক স্বাধীনতা আশা করে কিন্তু একে বাস্তবে অগ্রাধিকার দেয় না। যদি বাস্তবেই টাকাকে ভালোবাসেন তা হলে সে আপনার কাছে আসবেই। তবে সে জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
১৫. বিশ্রাম বাদ দিন:-
মানুষের মতো টাকা ঘুমায় না। এর নেই সাপ্তাহিক ছুটির দিন কিংবা অন্য কোনো বিশেষ দিবস। সারা বছর একটানা কাজ করে যায় টাকা। আর তাই টাকাকে ধরতে হলে আপনারও বিশ্রামের কথা ভুলে যেতে হবে। শুধু যে বিশ্রামটুকু না করলেই নয়, তাই করতে হবে।
১৬. গরিব অবস্থাকে ভয় করুন:-
অনেক ধনী মানুষই অতীতে গরিব ছিলেন। বিল গেটস বলেন, 'গরিব অবস্থায় জন্মগ্রহণ করা আপনার ভুল নয়। কিন্তু গরিব অবস্থায় মৃত্যুবরণ করাটা আপনার ভুল। ' গরিব হওয়াকে ভয় পাওয়া দারিদ্র্যের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে বহু ব্যক্তিকে উৎসাহিত করেছে।
১৭. গুরু খুঁজে নিন :-
মধ্যবিত্ত সমাজে ধনী হওয়ার কলাকৌশল নিজে নিজে রপ্ত করা অনেক কঠিন। এ ক্ষেত্রে একজন ধনী ব্যক্তির আন্তরিক পরামর্শ প্রয়োজন। আর এ কাজে উপযুক্ত ব্যক্তি খুঁজে নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
১৮. বিনিয়োগ, বিনিয়োগ, বিনিয়োগ:-
আপনার হাতে আয়ের সম্ভাব্য যত উৎস আছে, তা একত্রিত করে সতর্কভাবে বিনিয়োগ করতে হবে। আর এ বিনিয়োগ থেকে পাওয়া অর্থ আবার বিনিয়োগ করতে হবে। এভাবে ক্রমাগত বিনিয়োগ করেই আপনার আর্থিক ভিত্তি সম্প্রসারিত হবে।
১৯. বড় লক্ষ্য নির্ধারণ করুন:-
অনেকেই লক্ষ্য নির্ধারণে বিচক্ষণতার পরিচয় দেয় না। এ কারণে তারা লক্ষ্যমাত্রাই অল্প করে ধরে রাখে। ফলে মূল উপার্জন এর চেয়েও কমে যায়। তাই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে বিচক্ষণতার পরিচয় দিন, এক কোটির জায়গায় টার্গেট করুন ১০ কোটি টাকার। এ ক্ষেত্রে পুরো টাকাটা না পেলেও এর কাছাকাছি অন্তত পৌঁছাতে পারবেন।
২০. টাকার পিছনে ছুটবেন না, টাকাকে নিজের পিছনে ছোটান:-
বড়লোক হতে গেলে টাকার পিছনে ছুটলেই চলে না। দেখবেন ঠিক পরিকল্পনা করে চলে টাকাই আপনার পিছনে ছুটবে। আচ্ছা নিন একটা ঘটনমা বলি। বিল গেটসের। বিল গেটস একদিন এক বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেন লেকচার দিতে। অনেক কথা ছাত্রদের সঙ্গে শেয়ার করার পর যখন বিলের বক্তৃতা শেষ হল, তখন হঠাত্ই তাঁর পকেট থেকে ১০ ডলার পরে গেল। বিল কিন্তু সে টাকাটা কুড়োলেন না। সবাই তখন অবাক হয়েছিলেন। বিল কারণ হিসেবে বলেছিলেন, ওই টাকা কুড়োতে যত সময় খরচ হল, ওই সময় ব্য করে তিনি তার চেয়ে বেশি টাকা রোজগার করতে পারেন। নিজেকে এমনভাবেই তৈরি করুন। শুধু টাকার পিছনে ছুটবেন না। সময়কে, কাজকে উপভোগ করে কাজ করুন।
২১. ব্যতিক্রমি কিছু ব্যবসা-বিনিয়োগের কথা ভাবুন:-
দুনিয়ার বেশিরভাগ বড়লোক মানুষই ব্যতিক্রমী কিছু ভাবনার ওপর ভর করে ব্যবসা করেই নিজেদের ওপরে নিয়ে গিয়েছেন। আচ্ছা একবার ভাবুন Scotch Brite এর কথা। আগে তো আমারা এমনি ন্যাকড়া দিয়েই বাসনপত্র মাজতাম। কিন্তু কেউ একজন ভেবেছিলেন এমন একটা কিছু আনতে হবে যা দিয়ে ন্যাকড়াকে বদলে অ্য অভ্যাস করানো যায়। কিংবা ধরুন আজকালকার অনলাইন শপিং। অ্যামাজন, ফ্লিপকার্টের মালিকরাও ব্যতিক্রমি ভেবেছিলেন। আপনিও ভাবুন, পড়ুন, দেখুন। নতুন ব্যবসার ভাবনা লুকিয়ে আছে আমাদের চোখের সামনে, শুধু আমরা সেটা দেখতে পারছি না। এই ভাবনা, আর তারপর সেটাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার ওপরেই আপনার উজ্জ্বল ভবিষ্যত নির্ভর করছে।
২২. খরচের জায়গাগুলো একটু ভাল করে খেয়াল করুন:-
পনি হয়তো ভাল রোজগার করছেন। কিন্তু মাসের শেষে দেখছেন সেই ভাঁড়ে মা ভবানি অবস্থা। তাহলে এক কাজ করুআন দেখুন তো আপনার খরচগুলো ঠিক কোথায় কোথছায় হচ্ছে। আচ্ছা, আপনার লাইফস্টাইলটা কী একটু বড়লোকি হয়ে যাচ্ছে না। হয়তো এর চেয়ে একটু কম খরচ হলেও আপনার চলে যায়। এসবই আপনি বুঝতে পারবেন যদি খরচের জায়গাগুলো একটু লিখে রাখেন। দেখবেন পরে চোখ বোলালে বুঝবেন কোন জায়গাগুলো একটু চেক করতে হবে।
২৩. একই চাকরিতে বছরের পর বছর আটকে না থেকে ভাল সুযোগ পেলে নতুন জায়গায় যান:-
বছরের পর বছর একই কোম্পানিতে কাজ করে যাচ্ছেন। শুধু এই কথা ভেবে ‘যাক চলে যাচ্ছে, রোজগার তো করছি, খেতে তো পাচ্ছি’। এভাবে না ভেবে সুযোগ তৈরি করুন, সুযোগ কাজে লাগান। কোম্পানি পরিবর্তন করলে একদিকে মাইনে, পদ বাড়ে, অন্যদিকে বাড়ে আত্মবিশ্বাস, আসে নতুন কিছু করার মানসিকতা। তাই ভাল সুযোগ পেলে নতুন জায়গায় যান।
২৪. অজুহাত দেখানো:-
একটি কাজ না করার পেছনে হাজারটি অজুহাত দেখানো যায়, কিন্তু কাজটি করার জন্যে একটি কারণই যথেষ্ট।
২৫. শুধু পছন্দসই চাকরি নয়, চাকরির জায়গাটাকেও গুরুত্ব দিন:-
শুধু পছন্দসই চাকরিতে পেয়েছেন বলেই আত্মহারা হবেন না। চাকরির জায়গাটাও গুরুত্ব দিন। ধরুন আপনি চলচ্চিত্রশিল্পের সঙ্গে জড়িত। তাহলে চেষ্টা করুন এই কাজের সেরা জায়গায় কাজ করতে। এটা ঠিক যোগ্যতা থাকলে যে কোনও জায়গা থেকে উজ্জ্বল হওয়া যায়। তবে এটাও ঠিক অনেক সময় পেশাদার আবহ আপনার কাছ থেকে সেরাটা বের করে নেয়। তাই একেবারে সেরা জায়গায় কাজ করলে আপনার সেরাটা দেওয়া যায়। তাই সেরাটা পাওয়ায় যায়।
২৬. চোখ কান খোলা রাখুন, রোজগারের পন্থা আসতে পারে যে কোনও জায়গা থেকে:-
সব সময় চোখ কান খোলা রাখুন। যে কোনও আলোচনা থেকে বড় কোনও রোজগারের একটা দিশা তৈরি হতে পারে। কখনও ভাববেন না ওটা আমার কাজ নয়। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকেরবার্গ পর্যন্ত বলেছেন, চোখ কান খোলা না থাকলে তিনি কখনই ফেসবুক খুলতে পারতেন না। ইন্টারনেটটা খুব ভাল করে ঘেঁটে ফেলনু। গোটা দুনিয়াটা লুকিয়ে আছে নেট দুনিয়ায়। সেখান থেকে রোজগারের পন্থা বের করুন। মাথা খাঁটান।
২৭. সময়কে কাজে লাগান:-
বিনিয়োগ করার আগে ভাবুন-দিনের ২৪ ঘণ্টাকে ভাগ করে নিন। রোজগার করতে হলে পরিশ্রম করতে হবে। কিন্তু তার চেয়েও বেশি করতে হবে সময় পরিকল্পনা। ধরা যাক আপনি চাকরি করেন। মানে ৯-১০ ঘণ্টা আপনি কাজে ব্যস্ত, তারপরের সময়টা কাজে লাগান। ছোট কোনও ব্যবসা থেকে শুরু করুন। টিউশনিও খারাপ অপশন নয়। যে অতিরিক্ত সময়টা কাজ করছেন সেই টাকাটা বিনিয়োগ করুন। ভুলে যাবেন না বিন্দুতে বিন্দুতে সিন্ধু হয়।
২৮. স্বপ্ন দেখুন দোষ নেই, কিন্তু সবার আগে সঠিক পরিকল্পনা করুন:-
বড়লোক হব এমন স্বপ্ন দেখাটা ভাল। হ্যাঁ, ছেঁড়া কাঁথাতে শুয়ে থেকেও লাখ টাকার স্বপ্ন দেখাও ভাল। কারণ আগে কোনও কিছু করতে হলে স্বপ্ন দেখতে হয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে আগে সঠিক পরিকল্পনা করতে হবে। ডায়েরিতে সময় ঠিক করে পরিকল্পনা করুন। ধরুন লিখলেন এক বছরের মধ্যে এক লাখ টাকা জমাতে চান। তারপর স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ। দশ মাস পর হিসেব করে নিন পরিকল্পনা ঠিক দিকে বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না।
২৯. আগে ঠিক করুন কোন ধরনের বড়লোক হতে চান:-
আগে ঠিক করুন কোন ধরনের বড়লোক হতে চান। মানে ব্যবসার মাধ্যমে নাকি চাকরি করে। বড়লোক মানে প্রচুর টাকার মালিক নাকি বড় মনের মানুষ। সে সবগুলো আগে ঠিক করুন। ব্যবসা করে বড় কিছু করতে হলে ধাপে ধাপে ওঠার চেষ্টা করুন। লাভের টাকার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিনিয়োগ করুন। একটা ব্যবসায় আটকে না থেকে ধীরে ধীরে অনেক কিছুতে বিনিয়োগ করার চেষ্টা করুন। চাকরি করে বড়লোক হতে হলে আগে টিম লিড করতে শিখুন। কাজের পাশাপাশি নতুন আইডিয়া নিয়ে আসুন। অফিসের সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে বসকে নিজের কাজের ভাল দিকটা বোঝানোর চেষ্টা করুন।
৩০. যাদের সহায়তা করছেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন:-
ধনী ও সফল ব্যক্তিদের খুবই সহায়তাকারী হিসেবে দেখা যায়। তারা সব সময় মানুষকে নানাভাবে সহায়তা করে এবং সহায়তাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাই আবার তাদের ধনী হয়ে উঠতে সাহায্য করেন। এ কারণে আপনি যাদের সহায়তা করছেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। তারাই একসময় আপনাকে ধনী ও সফল হতে সাহায্য করবে।
৩১. ভালোভাবে একটি কাজ করুন:-
আপনি যে কাজটিতে অন্যের তুলনায় ভালো, সে কাজটিতে দৃষ্টি নিবদ্ধ করুন। এরপর সে দক্ষতা ব্যবহার করে অর্থ উপার্জনের পথ বের করুন। আর পাশাপাশি এ দক্ষতাকেও বাড়িয়ে চলুন। দেখা গেছে, আর্থিকভাবে সফল ব্যক্তিদের অন্তত এক দিকে অন্যদের চেয়ে ভালো দক্ষতা রয়েছে। এটা ব্যবহার করেই তাদের অনেকে উন্নতি করেছেন।
৩২. কোনো এক বিষয়ে বিশ্বসেরা ১০ জনের তালিকা করুন:-
আপনার আগ্রহের কোনো একটি বিষয়ে বিশ্বের সেরা ১০ জনের তালিকা করুন। তারা হতে পারেন সঙ্গীত শিল্পী, ব্যাংকার কিংবা অন্য কোনো পেশার মানুষ। তাদের সাফল্যের পেছনের কাহিনী অনুসন্ধান করুন। সফল ব্যক্তিদের শুধু সম্মান করলেই হবে না, তাদের সাফল্যের পেছনের কাহিনীও জানতে হবে। এরপর সে কাহিনী থেকে নেওয়া শিক্ষা নিজের জীবনে কাজে লাগাতে হবে।
৩৩. উন্নতি পর্যবেক্ষণ করুন:-
ধনী হওয়ার যদি সংকল্প করেই থাকেন, তাহলে মাঝপথে গিয়ে গন্তব্যের কথা ভুলে গেলে চলবে না। তা পথ যথই দীর্ঘ হোক না কেন। এ কারণে প্রতিনিয়ত আপনার উন্নতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে। আপাত দৃষ্টিতে এ পথচলা খুবই ধীর মনে হবে। কিন্তু মনে রাখবেন, হাজার মাইলের পথ চলা একটি পদক্ষেপ দিয়েই শুরু হয়। আর এখানে প্রতিটি পদক্ষেপই অতি মূল্যবান।
৩৪. রুটিন তৈরি করুন, সে অনুযায়ী কাজ করুন:-
ধনী হওয়ার জন্য আপনার নির্দিষ্ট একটি রুটিন তৈরি করতে হবে এবং সে রুটিন অনুযায়ী চলতে হবে। যেমন ধরুন আপনি ২০০ পৃ্ষ্ঠার একটি বই লিখতে চান। তাহলে এ বইয়ের জন্য প্রতিদিন চারটি করে পাতা লেখা হতে পারে আপনার দৈনন্দিন রুটিনের অংশ। অথবা কোনো ব্যবসার কাজে আপনি যদি সফল হতে চান তাহলে প্রতিদিন ১০০ ক্রেতার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারেন। এটি সে ক্ষেত্রে হতে পারে আপনার রুটিনের অংশ।
৩৫. অধিগ্রহণ করতে আগ্রাসী হোন:-
সিআইএর জন্য ডেটাবেজ তৈরি করে ক্যারিয়ার শুরু করেন ল্যারি এলিসন। তিনি বর্তমানে ৪৮.৮ বিলিয়ন ডলারের মালিক। এরপর তিনি ১৯৭৭ সালে ওরাকল নামে ডেটাবেজ সফটওয়্যার কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। ওয়াল স্ট্রিটকে তিনি বলেন, আমরা বহু কাজে আমাদের অর্থ ব্যয় করি। আমরা স্টক কিনতে পারি, ডিভিডেন্ডের জন্যও অর্থ ব্যয় করতে পারি। কিন্তু আমরা প্রায়ই বড় অংকের অর্থ ব্যয়ে অধিগ্রহণ করতে আগ্রহী হই না। যদিও এ বিষয়টি খুবই সম্ভাবনাময়।
৩৬. আমি করতে পারতাম:-
একজন সফল বাক্তির কাছে পরিতাপ করাটা সবচেয়ে খারাপ অনুভুতি,যখন তারা নিজের কৃতকর্মের জন্য কিছু “আছে পারে” বা পরিস্থিতির হাত ছিল বা অন্যথায় তাদের এখন বুঝতে যে তারা “থাকতে হবে।”সফল ব্যক্তিদের নিজেদের দু:খ প্রকাশ করার সুযোগ দেন না।এর পিছনে দুটি কারন হয়ঃহয় তারা সুযোগ নিচ্ছে কোন ব্যাপার শ্রেষ্ঠতা নিতে, অথবা তারা অপেক্ষায় আছে যে আরেকটি সুযোগ।
৩৭. আমার কোন উপায় ছিল না:-
এখানে হাতে সবসময়ই উপায় বা সুযোগ রয়েছে এবং সফল মানুষরা জানে যে কিভাবে এই সুযোগ গুলোকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের পথ তৈরী করে নিতে হয়।নির্দিষ্ট মূল্য মতে এখন আমাদের নিজেদের কে বোঝানো ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় নেই যে আমরা এইটার শিকার এবং আমরা আমাদের পরিবেশের চেয়ে কম শক্তিশালী।
৩৮. কখনোই শেখা বন্ধ করবেন না:-
নিউ ইয়র্কের সাবেক মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গ বর্তমানে ৪৩.১ বিলিয়ন ডলারের মালিক। তিনি ব্লুমবার্গ এলপির প্রতিষ্ঠাতা। ব্লুমবার্গকে তিনি জানান, তার সাফল্যের সূত্র হলো কখনোই শেখা বন্ধ না করা। সব সময়েই নিত্যনতুন বিষয় শিখতে হবে এবং শেখার এ আগ্রহ কখনোই বাদ দেওয়া যাবে না বলে তিনি মনে করেন।
৩৯. প্রতিযোগীদের থেকে এগিয়ে থাকুন:-
বার্নার্ড আর্নল্ট বিলাসবহুল পণ্য নির্মাতা এলভিএমএইচের কর্নধার। তিনি ৩৪.৭ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের মালিক। তার প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় রয়েছে বেশ কিছু বিলাসবহুল পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। তিনি বলেন ‘আমি খুবই প্রতিযোগী মনোভাবসম্পন্ন। আমি প্রতিযোগিদের কাছ থেকে এগিয়ে থাকতে পছন্দ করি এবং সামনে এগিয়ে যেতে চাই।’
৪০. ব্যর্থতা থেকে শিখুন:-
মেক্সিকান এ ব্যবসায়ীর মালিকানায় রয়েছে কয়েকশ প্রতিষ্ঠান। কার্লোসের মোট সম্পদের পরিমাণ ৫৮.২ বিলিয়ন ডলার। তিনি ২০১০ সালে আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বৈরুতে বলেন ‘আমরা যখন সমস্যার মুখোমুখি হই, তারা চলে যায়। এ কারণে ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিন এবং সাফল্যকে গোপনে ডেকে আনুন।’
৪১. শিক্ষাগ্রহণ:-
আপনার সবচেয়ে অখুশি কাস্টমাররাই আপনার শিক্ষা নেওয়ার সবচেয়ে বড় উৎস। ’অর্থাৎ আপনার অসন্তুষ্ট ক্রেতাদের থেকেই আপনি শিক্ষাগ্রহণ করতে পারবেন। তাদের সকল অভিযোগই হচ্ছে শিক্ষার মূল উৎস।
৪২. চেষ্টা :-
আপনার আগ্রহের কোনো একটি বিষয়ে বিশ্বের সেরা ১০ জনের তালিকা করুন। তারা হতে পারেন সঙ্গীত শিল্পী, ব্যাংকার কিংবা অন্য কোনো পেশার মানুষ। তাদের সাফল্যের পেছনের কাহিনী অনুসন্ধান করুন। সফল ব্যক্তিদের শুধু সম্মান করলেই হবে না, তাদের সাফল্যের পেছনের কাহিনীও জানতে হবে। এরপর সে কাহিনী থেকে নেওয়া শিক্ষা নিজের জীবনে কাজে লাগাতে হবে।
৪৩. শিখুন:-
আপনার আগ্রহের কোনো একটি বিষয়ে বিশ্বের সেরা ১০ জনের তালিকা করুন। তারা হতে পারেন সঙ্গীত শিল্পী, ব্যাংকার কিংবা অন্য কোনো পেশার মানুষ। তাদের সাফল্যের পেছনের কাহিনী অনুসন্ধান করুন। সফল ব্যক্তিদের শুধু সম্মান করলেই হবে না, তাদের সাফল্যের পেছনের কাহিনীও জানতে হবে। এরপর সে কাহিনী থেকে নেওয়া শিক্ষা নিজের জীবনে কাজে লাগাতে হবে।
৪৪. সমালোচনা গ্রহণ করুন:-
অনেকেই ভালোভাবে নিতে পারেন না। যদিও বিল গেটসের পরামর্শ হলো, সমালোচনাকে সব সময় সাদরে গ্রহণ করতে হবে। সমালোচনাকারীর কথা ভালো না লাগলেও তা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে এবং তা থেকে নানা দোষ-ত্রুটি সমাধানের পথ খুঁজসমালোচনাকে তে হবে।
৪৫. আশাবাদী হওয়া:-
আশাবাদী হওয়ার বিষয়টি অনেক সহজ মনে হলেও অনেকের পক্ষেই আশাবাদী হওয়া কঠিন। আর আশাবাদী না হলে কোনো বিনিয়োগ কিংবা ব্যবসাই শুরু করা সম্ভব নয়। আশা ছাড়া দুর্গম চলার পথে এগিয়ে যাওয়া অসম্ভব।
৪৬. বিফলতার প্রস্তুতি:-
জীবনের সব কাজেই যে সফলতা পাওয়া যাবে এমন কোনো কথা নেই। নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে ব্যর্থতা আসতেই পারে। কিন্তু সেজন্য প্রস্তুত থাকা প্রয়োজন। বিফলতায় নিরাশ না হয়ে বরং তা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। পূর্ণোদ্যমে নতুন কাজে ঝাপিয়ে পড়তে হবে।
৪৭. লক্ষ্য নির্ধারণ ও সেদিকে অগ্রসর হওয়া:-
সাফল্যের জন্য প্রয়োজন একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করা এবং ক্রমাগত সেই লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হওয়া। জীবনে লক্ষ্য নির্ধারণ না করলে অগ্রসর হওয়ার উপায় থাকে না। তাই নির্দিষ্ট একটি সঠিক লক্ষ্য নির্ধারণ করে সে লক্ষ্য অনুযায়ী সব কার্যক্রম পরিচালিত করতে হবে।
৪৮. টাকাকে অগ্রাধিকার দিন:-
বহু মানুষই আর্থিক স্বাধীনতা আশা করে কিন্তু একে বাস্তবে অগ্রাধিকার দেয় না। যদি বাস্তবেই টাকাকে ভালোবাসেন তা হলে সে আপনার কাছে আসবেই। তবে এ জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
৪৯. কাজে বৈচিত্র্য আনুন:-
বহু ধরনের ধারণা আনুন নিজের কাজে। এতে অনেক কষ্ট ও সময় ব্যয় হতে পারে। তবে প্রাথমিকভাবে কষ্ট হলেও ভবিষ্যতে এর সুফল অবশ্যই পাবেন।
৫০. সর্বাত্মক চেষ্টা করুন:-
বহু ধরনের ধারণা আনুন নিজের কাজে। এতে অনেক কষ্ট ও সময় ব্যয় হতে পারে। তবে প্রাথমিকভাবে কষ্ট হলেও ভবিষ্যতে এর সুফল অবশ্যই পাবেন।সর্বাত্মক চেষ্টাই আপনাকে পৌঁছে দেবে লক্ষ্যে। আপনি যখন কিছু চাইবেন, প্রকৃতি আপনাকে তা পাইয়ে দিতে তোলজোড় শুরু করে। সুতরাং চেষ্টা করুন, পেয়ে যাবেন।
বর্তমান সময়ের আলোচিত বিষয়গুলোর
মধ্যে মূদ্রাস্ফিতি (Inflation) গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয়। সম্প্রতি বিশ্বের বেশ কয়েকটি
দেশে ব্যাপক হারে মূদ্রাস্ফিতি দেখা যাচ্ছে।
আজ আমরা, মুদ্রাস্ফিতি কি,
মুদ্রাস্ফিতি কিভাবে হয়, মূদ্রাস্ফিতির ভালো দিক খারাপ দিক, বাংলাদেশে মূদ্রাস্ফিতির
অবস্থা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
মূদ্রাস্ফিতি কি?
মূদ্রার মান কমে গেলে তাকে
মূদ্রাস্ফিতি বলে। আজ থেকে ২০ বছর আগে একটা পাঁচশত টাকার নোট দিয়ে যা ক্রয় করা যেত
এখন তা ক্রয় করতে আরও অনেক বেশি টাকা লাগে। ২০ বছর আগে যেই কাজের জন্য দশ হাজার টাকা
বেতন দেওয়া হত এখন সেখানে আরও বেশি টাকা বেতন দিতে হয়। ২০ বছর আগে একটা ১০০ টাকার নোটকে
অনেক বড় নোট ধরা হত, এখন ১০০ টাকা দিয়ে ২কেজি চালও কেনা যায় না। সব কিছুর দাম-খরচ বাড়তেই
থাকে। সামগ্রিক ভাবে যখন সবকিছুর দাম বাড়ে তখন টাকার মান কমে।
আর একটা কথা বলি পন্যের দাম
বাড়লেই মূদ্রাস্ফিতি হয় না। কখনও বাজারে হঠাৎ কোনো কিছুর দাম বেড়ে যায়। যেমন ধরুন হঠাৎ
চালের দাম বেড়ে ২০ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা হয়ে গেল। এই দাম আবার কমে ২০ টাকা এমনকি
১৫ টাকাতেও নেমে আসতে পারে। এখানে মুদ্রাস্ফিতির কারনেই দাম বেড়েছে বিষয়টা এমন নয়।
এখানে অন্যান্য কারন যেমন বাজারে সংকট বা অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিও হতে পারে।
সাধারনত মূদ্রাস্ফিতির হার
৩% থেকে ৬% বা আরও কম থাকলে তাকে স্বাভাবিক বলা যায়। যখন মূদ্রস্ফিতির হার এর চেয়ে
বেশি হয় তখন দেশে অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়।
মূদ্রাস্ফিতি কিভাবে হয়?
আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি যে
মূদ্রার মান কমলে মূদ্রাস্ফিতি হয়। একটি দেশের মূদ্রার মান বিভিন্নভাবে কমে।
মূদ্রাস্ফিতি তথা টাকার মান
কিভাবে কমে এটা বুঝার জন্য কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরলাম…
উদাহরণ ১.
ধরুন বাজারে জ্বালানি তেলের
সংকট। সাধারনত চাহিদার চাইতে পন্যের যোগান কম হলে পন্যের দাম বেড়ে যায়। অর্থাৎ বাজারে
তেলের সংকট তাই তেলের দাম বেড়ে গেছে। তেলের দাম বাড়ার কারনে পরিবহন সেক্টরে ভাড়া বেড়ে
যাবে।
এতে পন্য বাজারজাত ব্যবস্থায়
পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পাবে সাথে বৃদ্ধি পাবে অন্যান্য পন্যের দাম।
উদাহরণ ২.
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারনে
বিশ্বব্যাপি নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের দাম বেড়েছে। বাংলাদেশ এবং আরও বেশ কয়েকটি দেশের
অর্থনীতি যেসব পন্যের উপর নির্ভরশীল সেসব পন্যের দাম তেমন একটা বাড়েনি বরং কোনো ক্ষেত্রে
কমেছে। যেমন বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেকটা রেডিমেইড গার্মেন্টস (RMG) আইটেমের উপর নির্ভরশীল।
এ ধরনের পন্যের দাম তেমন একটা বাড়েনি। অর্থাৎ আমাদের রপ্তানি আয় যেটুকু বৃদ্ধি পাওয়ার
কথা তা বৃদ্ধি পায়নি।
অন্যদিকে যেসব পন্য আমদানি
করতে হয় সেগুলোর (জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল, গম, চাল, পোশাক শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল,
মেশিনারিজ আইটেম ইত্যাদি) দাম অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে ফলে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে।
এর কারনে ডলারের একটা সংকট
তৈরি হয়েছে। এই সংকটের কারনে ডলারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এই দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে
আমদানি খরচ আরও বেড়ে শেষে পন্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানে প্রায় সকল পন্যের দাম বৃদ্ধি
পেয়েছে। অর্থাৎ টাকার মান কমেছে।
উদাহরণ ৩.
সাধারনত সময়ের সাথে মানুষের
আয় বৃদ্ধি পায়। আয় বৃদ্ধি পাওয়া মানে ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়া। যদি দেশের সবারই ক্রয়
ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় তাহলে চাহিদা বেড়ে গিয়ে পন্যের দাম বেড়ে যাবে।
ধরুন এবছর আপনার বেতন ১০
হাজার টাকা থেকে ১৩ হাজার টাকা হল। তাহলে এখন আপনি আর একটু ভাল ভাবে চলার চেষ্টা করবেন।
আগে দিনে দুই বেলা খাবার খাইতেন, এখন ৩ বেলা খাবেন। এভাবে বেতন কিন্তু আপনার একা বাড়ে
নি। অন্যান্য যাদের বেতন বেড়েছে তারাও ২বেলার স্থানে ৩বেলা খাবার খাবে।
এদিকে একটা বিষয় খেয়াল করুন
আপনার বেতন বেড়েছে, কিন্তু দেশে খাবার উৎপাদন বাড়ে নি। তাহলে আপনাদের যাদের বেতন বেড়েছে
তাদের মধ্যে খাবারের চাহিদা ৩বেলার কিন্তু উৎপাদন আছে ২বেলার। তাহলে ঐ ২ বেলা খাবার
এর দাম বেড়ে যাবে। দিন শেষে আপনাদেরকে বাড়তি বেতন দিয়ে ২বেলা খাবারই খেয়ে থাকতে হবে।
উপরে মূদ্রাস্ফিতির সাধারন
৩টি উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে। তবে আরও বিভিন্ন ভাবে মূদ্রাস্ফিতি হয়। যেমন ঋন খেলাপি,
টাকা পাচার ইত্যাদি। একেক দেশে মুদ্রাস্ফিতি হয় একেক কারনে। তবে মাঝে মাঝে কোনো দেশে
টাকার মান না কমে বাড়ে।
মূদ্রাস্ফিতি হলে সমস্যা
কি?
মূদ্রাস্ফিতির প্রভাব জনসাধারনের
মধ্যে মারাত্মকভাবে পড়ে। অল্প মাত্রার মূদ্রাস্ফিতি যা ৪-৫% এর মধ্যে থাকে তা অর্থনীতির
জন্য ভাল। মূদ্রাস্ফিতি সীমার মধ্যে থাকলে তা বিনিয়োগ এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে।
মূদ্রাস্ফিতির কারনে জনসাধারনের
আয় বাড়লেও জীবনযাত্রার উন্নতি হয় না। যখন মূদ্রাস্ফিতির হার মানুষের আয় বৃদ্ধির হার
থেকে বেশি হবে তখন জীবনযাত্রার মানের অবনতি হবে।
মূদ্রাস্ফিতির কারনে স্থির
আয়ের মানুষ বিপদে পড়ে। আর যারা ব্যবসায়ী তারা লাভবান হয়। মূদ্রাস্ফিতির কারনে গরিবের
সম্পদ ধনীদের হাতে চলে যেতে থাকে।
যখন মূদ্রাস্ফিতির হার অনেক
বেশি হয় তখন মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখতে চায় না। কারন ব্যাংকে সুদ দেয় ৩ থেকে ১০/১১ শতাংশ।
মূদ্রাস্ফিতির হার এর চাইতে বেশি হলে ব্যাংকে টাকা রাখলে লোকসান গুনতে হবে। তাই ব্যাংকগুলো
ক্ষতির মধ্যে পড়ে যাবে। (এরকমটা হয় যদি মূদ্রাস্ফিতির হার অনেক বেশি হয়)
মানুষ টাকা সঞ্চয় করবে না।
কারন অধিক মূদ্রাস্ফিতির কারনে টাকা সঞ্চয় নিরাপদ না। টাকা সঞ্চয় কমে গেলে ব্যবসায়
বিনিয়োগ কমে যাবে।
ঋনদাতা ঋন দিবে না।
ব্যবসায় বিনিয়োগে বিনিয়োগকারীরা
আগ্রহ হারায়। স্বর্ণ ও অন্যান্য জুয়েলারি আইটেমে অথবা জমি কিনে টাকা বিনিয়োগ করবে।
এসব জিনিসে বিনিয়োগ করলে লাভবান হওয়া যায় ঠিকই কিন্তু এগুলো উৎপাদনশীল না। উৎপাদনশীলতা
কমলে মূদ্রাস্ফিতি আরও বাড়বে।
একবার ভেনিজুয়েলায় এমন অবস্থা
হয়েছিল যে একটি মুরগি কেনার জন্য ঠেলাগাড়িতে করে বলিভার (ভেনিজুয়েলার মূদ্রা) নিতে
হয়েছিলো। তারা প্রচুর বলিভার (ভেনিজুয়েলার মূদ্রা) দিয়ে ডলার (মার্কিন) কিনে বিনিময়
করত।
মুদ্রাস্ফিতিতে লাভবান কারা
পূর্বেই বলেছি যারা ব্যবসায়ী
তারা মূদ্রাস্ফিতির কারনে লাভবান হয়। তাছাড়া যারা স্বর্ণ, ডায়মন্ড, অন্যান্য জুয়েলারি,
জমি, রিয়েল এস্টেট ইত্যাদিতে বিনিয়োগ করে রেখেছে তারা লাভবান হবে।
যারা আমদানি ব্যবসা করে প্রাথমিক
পর্যায়ে তারা লাভবান হবে। কারন মূদ্রাস্ফিতির কারনে দেশে পন্যের দাম বেড়ে গেলেও অন্যান্য
দেশে পন্যের দাম কিন্তু বাড়বে না। তখন ঐ পন্য আমদানি করার চাহিদা বেড়ে যাবে। আমদানি
বেড়ে গেলে অন্যান্য দেশের মূদ্রামানের তুলনায় আমাদের দেশের মূদ্রামান কমে যাবে। ফলে
আমদানি খরচও বেড়ে যাবে।
মূদ্রাস্ফিতিতে ঋনগ্রহীতা
লাভবান হবে। কারন ঋন পরিশোধে যে টাকা ফেরত দিতে হবে তার মান ঋন হিসেবে নেওয়া টাকার
মানের তুলনায় কম।
বাংলাদেশে মূদ্রাস্ফিতি
হয় কেন?
অতিরিক্ত জনসংখ্যা মূদ্রাস্ফিতির
বড় একটি কারন। দেশে যে হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই হারে পন্য বা সেবার হার বৃদ্ধি
পায়নি।
বাংলাদেশে মুদ্রাস্ফিতি বৃদ্ধি
পাওয়ার বড় একটি কারন হল দেশের মানুষের টাকা বেড়েছে। অর্থাৎ মানুষের আয় বেড়েছে। কিন্তু
সেবা ও পন্য উৎপাদন বাড়েনি।
তাছাড়া বাংলাদেশে পন্য আমদানির
চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই অনুপাতে রপ্তানি হচ্ছে না। যার কারনে অন্যান্য দেশের টাকার
তুলনায় বাংলাদেশের টাকার মান কমছে। ফলাফলে মূদ্রাস্ফিতি।
বানিজ্যিক ব্যাংকগুলোর অধিক
পরিমানে ঋন দেওয়া মূদ্রাস্ফিতির বড় কারন। বানিজ্যিক ব্যাংক অধিক পরিমানে ঋন দিলে মানুষের
হাতে বেশি টাকা চলে যায়। যার কারনে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়ে যায়। ফলাফল মূদ্রাস্ফিতি।
ঋন খেলাপির কারনে এবং টাকা
পাচারের কারনে মূদ্রাস্ফিতি হয়। বাংলাদেশে ঋন খেলাপিও বেশি হয় টাকা পাচারও হয় অনেক।
এসব কারনেই মূলত বাংলাদেশে মূদ্রাস্ফিতি হয়।
বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে প্রাকৃতিক
দূর্যোগ দেখা যায়। বন্যা, খরা, অনাবৃষ্টি ইত্যাদি কারনে কৃষি পন্য উৎপাদন কমে যায়।
পন্যের উৎপাদন কম হলে দাম বেড়ে যায়।
বিশ্বব্যাপি জ্বালানি তেলের
দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এটাও বাংলাদেশে মূদ্রাস্ফিতির
একটা কারন।
দেশে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক
কাজে অনেক টাকা খরচ হয়। বেশিরভাগ প্রজেক্টেই দূর্নীতি হয়। এখানে দূর্নীতির মাধ্যমে
কিছু মানুষ প্রচুর অবৈধ টাকা আয় করে। তারপর এসব প্রজেক্টে যে টাকা খরচ হয় তা জনগন থেকেই
করের মাধ্যমে আদায় করা হয়। জনগনের উপর চাপানো অতিরিক্ত করও মূদ্রাস্ফিতির কারন।
বাংলাদেশে মূদ্রাস্ফিতি
ঠেকাতে করনীয় কি?
উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে দেশের
চাহিদা পূরন করে রপ্তানি বৃদ্ধি করলে অনেকাংশে মূদ্রাস্ফিতি কমে যাবে।
উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য
ব্যবসায়ীদেরকে আরও বেশি বিনিয়োগে আগ্রহী করে তুলতে হবে এবং সহজে ব্যবসার জন্য সুযোগ
সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে। সাথে পন্য রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য উন্নত মানের পন্য উৎপাদন করতে
হবে।
যখন ব্যবসায়ীদের দেশে বিনিয়োগ
করার আগ্রহ বাড়বে তখন বিদেশে টাকা পাচার কমে যাবে। বাংলাদেশে ব্যবসায় বিনিয়োগ সুবিধাজনক
হলে অন্যান্য দেশ থেকে এখানে বিনিয়োগ আসবে।
ঋন খেলাপি নিয়ে আরও কঠোর
হতে হবে। সাথে দূর্নীতি দমনেও কঠোর হতে হবে।
দেশে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী
বেশি মুনাফার আশায় কৃত্তিম সংকট তৈরি করে পন্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। এজন্য সরকারকে পন্যের
সর্বোচ্চো দাম নির্ধারন করে দিতে হবে।
অতিরিক্ত মূদ্রাস্ফিতি ঠেকাতে
রেমিটেন্স আরও বাড়াতে হবে। বেশি রেমিটেন্স পেতে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি করতে হবে।
আজকের আলোচনা নিয়ে কোনো প্রশ্ন
বা মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন।
ধন্যবাদ।