ইসরায়েল কেন এতো শক্তিশালী?
Posted on: 2021-05-21 08:52:35 | Posted by: Admin
(ছবিতে হামলায় বিধ্বস্ত মারকাভা ও লেবানন থেকে ড্যামেজড মারকাভা টেনে নিয়ে যাচ্ছে ইজরাইল )
আমেরিকা, ফ্রান্স জার্মানির মতো উন্নত দেশগুলো থেকে সহযোগিতা পেয়ে ইজরাইল আজকের অবস্থানে আসতে পেরেছে। দীর্ঘকাল ধরে অবরুদ্ধ ফিলিস্তিন পর্যাপ্ত সামরিক সহযোগিতা পেলে ইসরাইলের সাথে সমানতালে লড়তে পারত। তার একটি উদাহরণ দিলাম….
ইসরাইলের অহংকার মারকাভা ট্যাংকের পতনের রোমাঞ্চকর কাহিনী
প্রথম "মারকাভা" এর পতন হয় এর সার্ভিসে আসার প্রায় ২২ বছর পরে ২০০২ সালে।প্যালেষ্টাইনে হামলা করে বসে ইসরাইল মুসলিম মিলিশিয়া গ্রুপ সালেহিদিন বিগ্রেড এর এক তরুন যোদ্ধা যিনি ছিলেন মূলত মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। তিনি মারকাভার ডিজাইনের এর উপর গবেষনা করে বেশ কিছু দুর্বলতা খুজে বের করে। এবং এর মধ্যে সে বের করে যে মারকাভার বেলি সাইড এবং ব্যাক ডোর এর নিরাপত্তা অনেক কম এবং এসব নিদিষ্ট জায়গায় হামলা চালালে মারকাভা ধ্বংস করা সম্ভব। কিন্তু সালেহিদিন বিগ্রেডের কমান্ডাররা প্রথমে তার কথায় মারকাভায় এটাক করে ফল পাওয়া যাবে বিশ্বাস করেনি।কারণ ২২ বছর ধরে তান্ডব চালিয়ে আসা এই দানব প্যালেস্টাইনদের কাছে ছিলো ধ্বংসাতঙ্ক এবং অজেয়।কিন্তু নতুন প্রজন্মের যোদ্ধাদের কাছে এটা একটা চ্যালেন্জ।পরে ৩ তরুন যোদ্ধা কমান্ডারদের চ্যালেন্জ করে যে তারা মারকাভা ধ্বংস করবেই। এ লক্ষ্যে তারা ফাদ পাতে গাজার নাতসাদিন নামে ইসরাইলি নতুন বসতি হচ্ছে এমন জায়গায়। তারা নাতসাদিন এ প্রবেশের রাস্তায় তাদের তৈরি ২টা মাইন বসায় এর একটা ছিলো ৩০ কিলো এবং অন্যটা ছিলো ৮০ কিলো । প্রথম মাইনটা একটি সৈনিকবাহি ট্রাকে আঘাত করে যা কিনা ইহুদি সেটেলারদের বাসকে কর্ডন করে আনছিলো।সেই হামলায় প্রায় ১০ জন সেনা মারা যায় সেখান থেকে আহতদের সরাতে ইজরাইলিরা তদের বিশ্বত মারকাভা কে পাঠায়।এবং এই মারকাভার বেলি সাইডে আঘাত হানে ৮০ কেজির ঐ মাইন।
হাজার আত্বঘাতির হামলা ঠেকিয়ে দেয়া ইজরাইলিদের মারকাভা এবার হেরে যায়। সার্ভিসে আসার ২২ বছর পরে ফেব্রুয়ারী ২০০২ সালে মাইনের আঘাতে ধ্বংস হয়ে যার ইজরাইলিদের সমর দম্ভের প্রতীক, তাদের প্রিয় Gods Chariot মারা যায় ৬ ক্রু সহ ১০ জন সোলজার ।গ্রুপ সালেহিদিন বিগ্রেড এর এই সাফল্য দেখে আরেক গ্রুপ আলকুদস বিগ্রেড এর যোদ্ধারাও মারকাভা ধ্বংসে আগ্রহী হয়ে উঠে। কিন্তু তখন মারকাভা আর গাজা সিটির মাঝে পেট্রোল করা বন্দ্ধ ।তারা গাজার সীমান্তবর্তী এলাকা রাফা তে গিয়ে একটা মারকাভা কে পেট্রোল করতে দেখে সেটাতে এটাক করার সিদ্ধান্ত নেয়।তারা সাহায্য নেয় সেই মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এর যিনি মারকাভার দুর্বলতা বের করেন এর পরে কয়েক দিন তারা ঐ এলাকায় পেট্রোল করতে আসা ট্যাংক গুলোকে লক্ষ্য করতে থাকে।কিন্তু হামলা করার জন্য তাদের কাছে ছিলো পুরোনো সোভিয়েত মডেলের আরপিজি(রকেট প্রোপাইড গ্রেনেড) ।
তারা ট্যাংক ইউটার্ন নেয়ার সময় ট্যাংকের ব্যাকডোরে পরপর ২টা আরপিজি চার্য করে তরুণ ইঞ্জিনিয়ারের সুত্রনুসারে প্রথম আরপিজি ব্যাকডোর কে ধ্বংস করে ফেলে এবং ২য় আরপিজি ভান্গা দরজা দিয়ে ভিতরে গিয়ে বিস্ফোরিত হয়। ঐ বিস্ফোরন এর প্রভাবে ভিতরে থাকা ৫০ টি ১২০ এমএম ট্যাংকের গোলাও বিস্ফোরিত হয় ভয়াবহ সেই বিস্ফোরনের আওয়াজ প্রায় ৮০ কিলোমিটার দুরের শহরে থাকা লোকজনও শুনতে পায়। বিস্ফোরন স্থল প্রায় ২০ফিট গর্ত হয়ে যায় । এই বিস্ফোরন এতই ভয়াবহ ছিলো যে বিস্ফোরিত ট্যাংকের মেইন গানের ১১৪৫ কেজি ওজনের একটা অংশ পাওয়া যায় বিস্ফোরন স্থল থেকে প্রায় ১২০০ মিটার দূরে শক্তিশালী এই বিস্ফোরনের প্রভাবে আশে পাশের আরও কয়েকটা ট্যাংক ও ধ্বংস হয় কতসেনা নিহত হয়েছে তা ইসরাইল প্রকাশ করেনি এক তরুণ ইঞ্জিনিয়ারের কাছেই পরাজিত হয় এই মারকাভা !! তার গবেষণার কারণেই আজকে এটা ধ্বংস করা পানি ভাত কয়েক সপ্তাহের মাথায় আল মুগাজি রিফিউজি ক্যাম্পের কাছে ল্যান্ড মাইনের আঘাতে আরেকটা মারকাভা ধবংস হয়। এর পর থেকে ইজরাইল গাজা সিটিতে স্থল অভিযান কমিয়ে দিতে থাকে।
তবে মারকাভা সবচয়ে বড় ধাক্কা খায় লেবানন যুদ্ধে।হিজবুল্লাহ প্যালেস্টাইনদের এই সব সফল হামলা থেকে জেনে নেয় কিভাবে মারাকাভা কে ধবংস করতে হয়।তারা মারকাভার উপর শক্তিশালী রাশান kornet মিসাইল ( নিচের ছবিতে দেয়া) ব্যাবহার করে।২০০৬ সালের ৩৪ দিনের ( ট্যাংক যুদ্ধ ৬ দিন) ঐ যুদ্ধে ইজরাইল হারায় ১০০টা মারকাভা এছাড়াও ঐ যুদ্ধে মোট মোটামুটি ড্যামেজ বা সেমি ড্যামেজ হয় প্রায় ২৫০ মারকাভা।